Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
গ্রাম আদালত
বিস্তারিত
গ্রাম আদালত কি?

গ্রাম আদালত হলো গ্রামাঞ্চলের ছোট ছোট দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় যে আদালত গঠিত হয় সে আদালত হলো গ্রাম আদালত। সহজ কথায় গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদে ৩,০০,০০০/- টাকা মূল্যমানের দেওয়ানী ও ফৌজদারী মামলা নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে যে আদালত বসে সে আদালতই হলো গ্রাম আদালত। গ্রাম আদালত গ্রামাঞ্চলের সুবিধা বঞ্চিত অনগ্রোসর জনগোষ্ঠীর সুবিচার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। এখতিয়ার সম্পূর্ন এলাকার জনগণ ফৌজদারী হলে ১০টাকা এবং দেওয়ানী হলে ২০টাকা দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতে এই মামলা দায়ের করতে পারে। গ্রাম আদালতের এখতিয়ার সম্পন্ন মামলা অন্য কোন আদালত বিচার করতে পারে না। গ্রাম আদালতে মামলা করলে কোন আইনজীবির প্রয়োজন হয় না। যার কারনে মামলা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার কোন সুযোগ নেই। স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং গন্যমান্য বিচারকের উপস্থিতিতে এই আদালত বসে। যে আদালতে বিচারক সংখ্যা হলো ০৫জন। দুই জন মনোনীত সদস্য থাকবেন আবেদনকারীর পক্ষে এবং ০২ জন সদস্য হবেন প্রতিবাদীর পক্ষে। যার মধ্যে একজনকে অবশ্যই হতে হবে সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য। স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং গন্য মান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে এই বিচার অনুষ্ঠিত হয় বলে এখানে মিথ্যা সাক্ষী দেওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। 

গ্রাম আদালতে মামলার আবেদন পত্রে কি কি তথ্য দিতে হবেঃ-

১। আবেদন পত্রটি লিখিতভাবে দাখিল করতে হবে।

২। যে ইউনিয়ন পরিষদের নিকট আবেদন করা হবে সে ইউনিয়ন পরিষদের নাম ঠিকানা থাকতে হবে।

৩। আবেদনকারী এবং প্রতিবাদীর নাম,ঠিকানা ও পরিচয় থাকতে হবে।

৪। সাক্ষী থাকলে সাক্ষীর নাম,ঠিকানা ও পরিচয় থাকতে হবে।

৫। ঘটনা,ঘটনা উদ্ভবের কারণ,ঘটনার স্থান ও ইউনিয়ননের নাম,সময়,তারিখ থাকতে হবে।

৬। অভিযোগ বা দাবির ধরন,মূল্যমান থাকতে হবে।

৭। ক্ষতির পরিমাণ, প্রার্থিত প্রতিকার থাকতে হবে।

৮। পক্ষদ্বয়ের সম্পর্ক উল্লেখ থাকতে হবে।

৯। সাক্ষীদের ভূমিকা থাকতে হবে।

১০। মামলা বিলম্বে দায়ের করা হলে তার কারণ উল্লেখ থাকতে হবে।

১১। আবেদকারীর সাক্ষর থাকতে হবে।

১২। মামলা দায়েরের তারিখ থাকতে হবে।

(ধারা ৩) গ্রাম আদালত এর আদ্যোপান্ত: বিচার ব্যবস্থায় দেশের দরিদ্র মানুষের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত ও সহজ করতেই গঠন করা হয়েছে গ্রাম আদালত। গ্রামের দরিদ্র মানুষ যাতে সহজে ও নামমাত্র খরচে তাদের এই অধিকার রক্ষা বা প্রতিষ্ঠা করতে পারে, সেজন্যেই গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ আদালতে গ্রামের ছোটখাটো বিরোধ বড় আকার ধারণ করার আগেই সহজে নিষ্পত্তি করা সম্ভব । গ্রামীন জনপদে ন্যায়বিচারের ভিত শক্তিশালী করতে ২০০৬ সালে এক আইনের মাধ্যমে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ সরকার । ইউনিয়ন পর্যায়ের এই আদালত উচ্চাদালতে মামলার চাপ কমিয়ে গোটা বিচার ব্যবস্থায় গতিশীলতা এনেছে । তবে সাধারণ মানুষ ও তাদেরই নির্বাচিত প্রতিনিধি দ্বারা গ্রাম আদালত পরিচালিত হওয়ায় বা জনপ্রতিনিধিদের আচরণগত ত্রুটির কারণে এই আদালত অনেক সময় ভাবমূর্তি রক্ষা করতে ব্যর্থ হয় । কিন্তু আইনগত দিক থেকে গ্রাম আদালত একটি পূর্ণাঙ্গ আদালত। গ্রাম আদালতের জরিমানা : ১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত আইন অনুযায়ী, সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এটি ফৌজদারি ও দেওয়ানি দু’ধারাতেই বিচার করার কর্তৃত্ব রাখে। এক্ষেত্রে জরিমানা বা ক্ষতিপূরণের মূল্যমান ৫ হাজার টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছিল। ২০০৬ সালের মে মাসে ১৯ নং আইনের অধীনে ১৯৭৬ সালের গ্রাম আদালত অধ্যাদেশের সংশোধন হয়ে যে আইনটি প্রণীত হয়, সেটি কম-বেশি আগের আইনটির মতোই।তবে এখানে প্রধান পরিবর্তনটি এসেছে মামলার ক্ষতিপুরনের আর্থিক সীমায়, যা ৫ হাজার টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে সেটি ৭৫,০০০ টাকা করা হয়। ২০২৪ সালে সংশোধনীর মাধ্যমে এর ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ৩,০০,০০০/- টাকায় উন্নীত করা হয়। ১৯৭৬ এবং ২০০৬ (সংশোধনী ২০২৪) আইনেই এর গঠন, পরিচালনা, মামলা যাচাই-বাছাই, ডিক্রি জারি এবং কার্যবিবরণীর নথি সংরক্ষণের কাজগুলোকে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
15/01/2025
আর্কাইভ তারিখ
15/01/2026